*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*
*====== প্রথম অধ্যায়,পর্ব -৮ ======*
*সাবায়ীচক্রের অপপ্রচারণা*
*সাবায়ীচক্রের অপপ্রচারণায় প্রভাবিত কতিপয় মুসলিম ঐতিহাসিকের বিষক্রিয়াঃ*
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যে, স্বীয় জাতির সঠিক ইতিহাস বিস্মৃত মুসলিম জাতির অনেকেই আজ মীর মোশারারফ হোসেনদের ন্যায় ইতিহাস লেখক, যারা সত্য মিথ্যা যাচাই না করে দলীল প্রমাণের কোন তোয়াক্কা না করে সবরকম ঐতিহাসিক বিবরণ সংগ্রহ করাতেই অধিক আনন্দ বোধ করেন এবং সঠিক ইতিহাস লেখার পরিবর্তে ইতিহাসের নামে গল্প-কাহিনী লেখার স্বাদ পেতে চান, বা স্বীয় বক্র স্বভাব ও মানসিক কু-চাহিদা পূরণ করে আত্মতৃপ্তি অনুভব করতে চান, আর সঙ্গে সঙ্গে সস্তা দরে ঐতিহাসিক বলে খ্যাত হতে চান। তাদের এ সকল আত্মতৃপ্তিমূলক লেখা তথাকথিত ইতিহাস পড়ে আজ মুসলিম মিল্লাতের বহু সরল প্রাণ মুসলমান হযরত উসমান রাযি. ও হযরত মুআবিয়া রাযি. সহ বিশিষ্ট ও অন্যতম কয়েকজন সাহাবীর রাযি. ব্যাপারে বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন। মুসলিম উম্মাহর মাঝে এ ধরনের মানসিকতা সম্পন্ন কিছু লোক তৈরি হওয়াও সাবায়ী খারেজীদের ইতিহাস বিকৃতির এক বিরাট সফলতা। এই মানসিকতায় অতি বেশী প্রভাবান্বিত হয়ে জনৈক ইসলামী চিন্তাবিদ খিলাফত ধ্বংসকারীদের ইতিহাস লিখতে গিয়ে সাবায়ী চক্রের মিথ্যা ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে বেশী দোষী সাব্যস্ত করেছে, তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান রাযি. ও হযরত মুআবিয়া রাযি. কে।
তার এই লেখনীর বদৌলতে আজ মুসলিম উম্মাহর বহুলোক সাহাবীদের থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, আবার অনেকে সাহাবী বিদ্বেষীও হয়ে পড়েছে।
আরো অধিক পরিতাপের বিষয় হচ্ছে যে, আধুনিক শিক্ষা অর্জনের নিমিত্তে যারা স্কুল, কলেজ ও ভার্সিটিতে গমন করেন, দীন ইসলাম ও তার সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে তাদের সম্যক ধারণা না থাকার দরুন তারা আরো বেশী বিভ্রান্ত হচ্ছেন। কারণ, তাদের পাঠ্যসূচীতে ইসলামের ইতিহাস নামে যে সব বই পাঠ্য রয়েছে, তা ব্রিটিশ উপনিবেশিক কর্তৃক প্রণীত সিলেবাসেরই অংশ। আর ব্রিটিশরা যে কখনই ইসলাম ও মুসলমানদের মঙ্গল চায়নি তা বলাই বাহুল্য। তাই তাদের প্রণীত সিলেবাসে সঠিক ঐতিহ্যপূর্ণ ইসলামী ইতিহাসের পরিবর্তে ভ্রান্তিকর ইতিহাস স্থান পাওয়াই স্বাভাবিক। তারা ইসলামী ইতিহাস লেখার ক্ষেত্রে ঐ সাবায়ী ও শিয়া চক্র কর্তৃক রচিত ইসলামের উপর কুঠারাঘাত করা গর্হিত মিথ্যা ইতিহাসের উপর নির্ভর করেছে। ঐ সব ইতিহাস অধ্যয়ন করার দরুন আজ তাবলীগ জামাআত বা উলামায়ে কিরামের সঙ্গে সম্পর্কহীন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত অধিকাংশ শিক্ষিত বন্ধুরা হযরত উসমান রাযি. ও হযরত মুআবিয়া রাযি. সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব পোষণ করে (নাউযুবিল্লাহ্)। অথচ মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট ভাষায় বলে গিয়েছেন- “আল্লাহকে ভয় কর- আল্লাহকে ভয় কর- আমার সাহাবীদের ব্যাপারে। আমার পরে তোমরা আমার সাহাবীদেরকে সমালোচনার পাত্র বানিওনা।” এ জন্য আজ জরুরী হয়ে পড়েছে- উপনিবেশবাদী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে ইসলাম সম্মত যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা। এ ব্যাপারে মুসলমানদের সোচ্চার হওয়া সময়ের দাবী ও কর্তব্য।
_*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন