*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*
*====== প্রথম অধ্যায়,পর্ব -৯ ======*
*ইবনে সাবার লক্ষ্যে*
হযরত উসমানের রাযি. বিরুদ্ধে আব্দুল্লাহ বিন সাবার দলের এসব অপপ্রচারের উদ্দেশ্য ছিল, জনগণকে খলীফার বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা এবং তাদের দিয়ে বিদ্রোহ করিয়ে মুসলামানদের সুশৃঙ্খল ঐক্যে ফাটল ধরিয়ে নিযামে খিলাফাত (খিলাফত ব্যবস্থা) কে ধ্বংস করা। এজন্য তারা উল্লেখিত পন্থায় অপপ্রচারের পাশাপাশি মদীনায় অবস্থানরত বিশিষ্ট সাহাবীগণের রাযি. নামে হযরত উসমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও জিহাদে অবতীর্ণ হওয়ার আহবান সম্বলিত জাল প্রচারপত্র বিলি করতে থাকে। এভাবে তারা বেশ কিছুসংখ্যক জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়।
এরই সাথে হিজরী ৩৪ সনে যখন এই মুসলিম নামধারী মুনাফিক সন্ত্রাসবাদী ঘাতক দলটি পূর্ণ জৈবিক উন্মাদনার সাথে আত্মপ্রকাশ করেছিল তখন তারা তাদের ইশতিহার ও ঘোষণা পত্রে আরেকটি বিষয় জুড়ে দিয়েছিল। তা ছিল এই যে এরূপ এক হাজার নবী এমন অতিবাহিত হয়েছেন যাঁদের প্রত্যেকে নিজ নিজ ওয়াসী বা খলীফা নিযুক্ত করে গিয়েছেন। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্ব শেষ নবী। আলী রাযি. সর্বশেষ ওয়াসী। অতএব, আলী রাযি. উসমান রাযি. অপেক্ষা খিলাফতের অধিক হকদার, উসমান অন্যায়ভাবে খিলাফত দখল করে রেখেছে।
এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা উল্লেখপূর্বক জনসাধারণের প্রতি হযরত উসমান রাযি. এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানায়। এতেও কিছু মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে ইবনে সাবার অনুসারী হয় এবং তা থেকেই পরবর্তীতে হযরত আলী রাযি. কেই মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একমাত্র ‘খলীফা বরহক’ বলে বিশ্বাসী শিয়া দল সৃষ্টি হয়।
মুনাফিক দল বস্তুতঃ হযরত আলীর রাযি. প্রতিও অনুরাগী ছিল না। তারা তাঁর নাম কেবলমাত্র নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহার করত। মুসলমানদের খিলাফত ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে হলে প্রথমে বর্তমান খলীফার বিরুদ্ধে আন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে। আর সুপ্রতিষ্ঠিত ও জনপ্রিয় খলীফা হযরত উসমান রাযি. এর বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়তে হলে- তার মত যোগ্য ও আকর্ষণীয় ব্যক্তির নাম নিয়ে দাঁড়াতে হবে। তাই তারা এক্ষেত্রে হযরত আলীর রাযি. নাম সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে। উদ্দেশ্য শুধু স্বার্থ উদ্ধার । অথচ হযরত আবু বকর রাযি. ও উসমান রাযি. এর খলীফা মনোনীত হওয়ার সময় কেউই এরূপ উদ্ভট দাবী করেনি যে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত আলী রাযি. কে খলীফা নির্ধারিত করে গেছেন। বস্তুতঃ হযরত আলীও রাযি. তাদের খিলাফত সর্বান্তকরণে গ্রহণ করে নিয়েছেন। উক্ত অপপ্রচার বাস্তবে ছিল খারেজীদের আন্দোলনের একটি কৌশল মাত্র।
এভাবে ইবনে সাবা তার দল-বল নিয়ে খলীফার বিরুদ্ধে ঘোলাটে বিশৃঙ্খলা, ও গর্হিত পরিস্থিতি সৃষ্টি ও সন্ত্রাসী দল গঠন করতঃ মদীনা আক্রমণে সক্ষম হয়। (মদীনা আক্রমণের ঘটনার বিবরণ অচিরেই ‘আসছে) ইবনে সাবার দল সংখ্যায় অধিক না থাকলেও তারা সকলেই ছিল অত্যন্ত সুসংগঠিত ও সুসংহত এবং তারা সকলেই ছিল সন্ত্রাসী ও নিষিদ্ধ কার্যে বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত ও উদ্দেশ্য পানে পৌছতে অত্যন্ত তৎপর। তাই তাদের পক্ষে এহেন পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং এরূপ গোপন শক্তিশালী সন্ত্রাসী দল গঠন করা সম্ভব হয়েছিল।
_*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন