অনুসরণকারী

বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০

36. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *﷽   ﷽    ﷽    ﷽    ﷽*    *﷽*


*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস* 



 *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -৭ ====🥀*


    *মুসলিমের গ্রেফতারী আর শাহাদাত* 


      ইবনে যিয়াদের নিকট তখন পুলিশের ৩০ জন লোক এবং শহরের গণ্যমান্য আর তার খানদানের ২০ জন লোক উপস্থিত ছিল। ইবনে যিয়াদ শহরের গণ্যমান্য লোকদের বলল আপনার নিজ নিজ গোত্রের উপর প্রভাব খাটিয়ে তাদেরকে মুসলিমের সংগ ত্যাগ করতে বলুন। তারা বাইরে এসে স্বীয় গোত্রের লোকদেরকে হুমকি ধমকি দিতে শুরু করল।


      অতঃপর নিরাপত্তার পতাকা উড্ডয়ন করল। মুসলিম ইবনে আকীলের সাথীরা তার থেকে পৃথক হতে শুরু করল। শেষ পর্যন্ত তার সাথে মাত্র ত্রিশ জন লোক রয়ে গেল। মুসলিম এই অবস্থা দেখে আশ্রয়ের জন্য কিনদাহ মহল্লার দিকে চললেন। মহল্লা পর্যন্ত পৌছতে পৌছতে সম্পূর্ণ একা হয়ে গেলেন। রাত ছিল অন্ধকার। ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে পড়ছিল। কোথায় মাথা গুজবেন এই চিন্তায় অস্থির হয়ে পড়লেন।


      একটি ঘরের দরজায় একজন বৃদ্ধাকে দন্ডায়মান দেখতে পেয়ে তিনি তার নিকট পৌঁছে নিজের মুসীবতের উপাখ্যান শোনালেন। বৃদ্ধার মনে দয়ার উদ্রেক হল। তাই নিজের গৃহের একটি প্রকোষ্ঠে তাকে লুকিয়ে রাখলেন। ইবনে যিয়াদ ইশার নামাযের পরে জামে মসজিদে ঘোষণা করে দিল, যে ব্যক্তি মুসলিম ইবনে আকীলকে আশ্রয় দেবে তাকে হত্যা করা হবে। আর যে ব্যক্তি তাকে ধরিয়ে দেবে তাকে পুরস্কৃত করা হবে। অতঃপর পুলিশকে অর্ডার দিল কুফার সকল ঘর বাড়ি তন্ন তন্ন করে তালাশ করার । বৃদ্ধার ছেলে প্রাণের ভয়ে সরকারী লোকদেরকে সংবাদ দিয়ে দিল। ইবনে যিয়াদ মুসলিম ইবনে আকীলকে গ্রেফতারের জন্য মুহাম্মদ ইবনে আশ’আসকে পাঠাল। ইবনে আশ’আস মুসলিম ইবনে আকীলের অবস্থানস্থল ঘিরে ফেলল। মুসলিম যখন জানতে পারলেন দুশমন মাথার উপর দন্ডায়মান অথচ তিনি একা আর তার মোকাবিলায় ৭০ জন তবুও তিনি দীর্ঘক্ষণ যাবৎ বাহাদুরীর সাথে লড়াই করলেন এবং কাউকে নিকটে ঘেষতে দিলেন না। পরিশেষে মুহম্মদ ইবনে আশ’আস বলল: আমরা আপনাকে নিরাপত্তা দিচ্ছি, আপনি নিশ্চিন্তে আমাদের আশ্রয়ে আসতে পারেন। আপনিতো আমাদের পর নন। মুসলিম ইবনে আকীল আঘাতে আঘাতে জর্জরিত ছিলেন, বাধ্য হয়ে তিনি মুহাম্মদ ইবনে আশআসের নিকট নিজেকে সপে দিলেন। রাস্তায় তিনি ইবনে আশ’আসকে বললেন আমার মনে হয় তুমি আমার প্রাণ বাঁচাতে পারবে না। তবে আমার একটা দরখাস্ত আছে তুমি সেটা অবশ্যই গ্রহণ কর। ইবনে আশ’আস জিজ্ঞেস করল কি সেটা? মুসলিম বললেন কাউকে পাঠিয়ে আমার অবস্থা সম্বন্ধে ভাই হুসাইনকে জানিয়ে দিও। আর আমার পক্ষ থেকে তাকে বলে দিও তিনি যেন কুফাবাসীদের ধোঁকায় না পড়েন এরা তো তারাই যাদের হাত থেকে মুক্তি আশা তার পিতা সব সময় করতেন। আরো বলে দিও তিনি যেন পরিবার পরিজন নিয়ে মক্কা ফিরে যান।


      মুহাম্মদ ইবনে আশ’আস ওয়াদা করল যে, এই পয়গাম ইমামের নিকট পৌঁছে দেবে। অতঃপর সে তার এই ওয়াদা রক্ষা করেছিল। (আল কামেলা ৩/পৃঃ/ ৩৮৭-৮৮-৮৯-৯৮)


      মুসলিম ইবনে আকীল ইবনে যিয়াদের সামনে নীত হলেন। ইবনে যিয়াদ তিরস্কার করলে তিনিও কঠোরভাবে প্রতিউত্তর দিলেন। অবশেষে ইবনে যিয়াদ তাকে শহীদ করে দিল। মুসলিমের পরে ইবনে যিয়াদ হানী ইবনে উরওয়াকে হত্যার আদেশ দিল। শহরে হানীর প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে মুহাম্মদ ইবনে আশ’আস তার প্রাণ রক্ষার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ইবনে যিয়াদ কোন কথা গ্রাহ্য না করে তাকেও শহীদ করে দিল।


      ইবনে যিয়াদ উভয় শহীদের মাথা ইয়াযীদের নিকট পাঠিয়ে দিল। ইয়াযীদ কৃতজ্ঞতা জানিয়ে লিখে পাঠাল আমি জানতে পারলাম হুসাইন ইরাকের পথে যাত্রা শুরু করেছে তুমি কঠোর পাহারাদারীর ব্যবস্থা গ্রহণ কর। কারো পক্ষ থেকে সামান্য সন্দেহ প্রকাশ পেলে তাকে গ্রেফতার কর। তবে যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ তোমার মোকাবিলায় তরবারী না উঠায় তুমিও তার বিরুদ্ধে তরবারী ধারণ করনা।


   _*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

44. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*       *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*  *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১৫====🥀*      *আহলে বাইতের সদস্য ব...