অনুসরণকারী

রবিবার, ৪ অক্টোবর, ২০২০

23. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *﷽   ﷽    ﷽    ﷽    ﷽*    *﷽*


*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস* 


*🥀== প্রথম অধ্যায়,শেষ পর্ব -২৩ ==🥀*


       *হযরত হাসান রাযি.-এর শর্তাবলী* 


   *১.* ইরাকবাসীকে পূর্ণ নিরাপত্তা দিতে হবে এবং অতীতের ঘটনাবলীর কারণে কাউকে যেন গ্রেফতার না করা হয়।


   *২.* আহওয়াজের সম্পূর্ণ রাজস্ব আমার নামে লিখে দিতে হবে।


   *৩.* অনুরূপভাবে আমার ভাই হুসাইন রাযি. কে বৎসরে বিশ লক্ষ দিরহাম দিতে হবে। 


   *৪.* রাষ্ট্রীয় অনুদান ও উপহারের বেলায় বনু হাশিমের হক অন্যদের চেয়ে অগ্রগণ্য মনে করতে হবে।


 *হযরত হাসানের রাযি. শর্তাবলীর উদ্দেশ্যঃ* 


      হযরত হাসান রাযি. আহওয়াজের রাজস্ব নিজের নামে লিখে দেয়া ও হযরত হুসাইন রাযি. কে বাৎসরিক বিশ লক্ষ দিরহাম দেয়ার যে দাবী করছিলেন, তা তাদের ব্যক্তিগত খরচ বা পারিবারিক ভোগ-বিলাসে রাষ্ট্রীয় সম্পদ অপব্যয়ের জন্য ছিল না। বরং হযরত আলী রাযি. খলীফা থাকার বৎসরগুলোতে প্রচুর সংখ্যক গরীব-মিসকিন ও বিধবা-অনাথদের রাষ্ট্রীয় তহবিল হতে দান করতেন। তার মৃত্যুর পর তারা সকলের তাঁর দুই পুত্র হাসান ও হুসাইনের রাযি. নিকটই ‘আসত ও ভীড় জমাত। হযরত হাসান রাযি. যে অল্প সময় (ছয়মাস) খলীফা ছিলেন, তখন তিনি ও তাঁর ভাই হুসাইন রাযি. রাষ্ট্রীয় তহবিল হতে তাদের দান করতেন। খিলাফতের দায়িত্ব হতে সরে দাঁড়াবার পর যেন ঐ সকল গরীব-মিসকীনদের অসহায় অবস্থায় খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে না হয়, যে জন্য হযরত হাসান রাযি. খিলাফতের পদত্যাগ কালে এ প্রস্তাব করেন।


      সন্ধি চুক্তি সম্পাদনের পর হযরত হাসান রাযি. খিলাফতের দায়িত্ব হতে সরে আসেন। অতঃপর হযরত হাসান ও হযরত মুআবিয়া রাযি. উভয়ে কুফায় আগমন করেন। কুফার জামে মসজিদে হযরত মুআবিয়া রাযি. কুফাবাসীর নিকট হতে বাই’আত গ্রহণ করেন। সর্বপ্রথম হযরত হাসান রাযি. তাঁর হাতে বাই’আত হন।


      খিলাফতের দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে হযরত হাসান রাযি. মদীনা শরীফে আগমন করেন এবং অবশিষ্ট জীবন স্বীয় নানা মহানবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সান্নিধ্যে অতিবাহিত করেন। এভাবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর এই ভবিষ্যদ্বানী বাস্তবায়িত হলোঃ “আমার এ ছেলে সাইয়িদ-নেতা হবে। আমার ধারণা- আল্লাহ তা’আলা তার দ্বারা মুসলমানদের দু’টি বিরাট দলের মধ্যে সন্ধি স্থাপন করাবেন।” উল্লেখ্য, হযরত হাসান রাযি. সর্বমোট ছয় মাস খলীফা ছিলেন।


      ইতিপূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুখ্যাত আব্দুল্লাহ বিন সাবার ষড়যন্ত্রকারী ও সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা গঠিত খারিজী দলের এক ঘাতক কর্তৃক হযরত আলী রাযি. শহীদ হন। অতঃপর তাঁর বড় ছেলে হযরত হাসান রাযি. খলীফা মনোনীত হন। হযরত হাসান রাযি. ছিলেন অত্যন্ত বুদ্ধিমান, বিচক্ষণ ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন একজন সাহাবী রাযি. । তাঁর সম্পর্কে রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি সুপ্রসিদ্ধ ভবিষ্যদ্বানী এই ছিল যে, তাঁর দ্বারা মুসলমানদের দুটি বিরোধী পক্ষের বিরোধের অবসান ঘটবে। আল্লাহর কুদরতে হযরত হাসান রাযি. খলীফা নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত অকাট্য ভবিষ্যদ্বানী বাস্তবায়িত হওয়ার কাজ অগ্রসর হতে লাগল। এদিকে হযরত হাসান রাযি. এবং তাঁর সমর্থক কুফা ও ইরাকবাসী মুসলমান, অপর দিকে হযরত মুআবিয়াহ রাযি. ও তার সমর্থক সিরিয়াবাসী মুসলমান- এ দুই পক্ষের মধ্যে আব্দুল্লাহ বিন সাবার মুনাফিক দল ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে রক্তক্ষয়ী বিরোধ সৃষ্টি পাঁয়তারা করছিল। সেই বিরোধ অবসানের কাজ অর্থাৎ হযরত মুআবিয়াহ রাযি. সঙ্গে সন্ধির প্রয়াস আরম্ভ করলেন। এতে ইবনে সাবার দল চিরাচরিতরূপে মুসলমানদের ঐক্যের মাঝে নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে প্রমাদ গুনলো এবং হযরত হাসানের রাযি. উপর ক্ষেপে উঠল। এমনকি এক পর্যায়ে তারা তাঁর উপর আক্রমণ করে বসল এবং তাঁর সবকিছু লুণ্ঠন করে নিলো। এরপর হযরত হাসান রাযি. মুসলমানদের ঐক্য প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং আরো অধিক তৎপর হলেন। মুসলমানদের সর্বনাশকারী খিলাফতের শত্রু এই পঞ্চম বাহিনীকে দমনের কাজে একমাত্র হযরত মুআবিয়াহ রাযি. কেই উপযুক্ত ব্যক্তি মনে করে তাঁর পক্ষে তিনি খিলাফতের পদত্যাগ করলেন এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁর হাতে বাই’আত হয়ে তাঁকে খলীফা হিসেবে বরণ করে নিলেন। এভাবে হিজরী ৪১ সনে হযরত মুআবিয়াহ রাযি. হাজার হাজার সাহাবায়ে কিরামের রাযি. উপস্থিতিতে মুসলিম জাহানের সর্বসম্মত খলীফা নির্বাচিত হন। সমগ্র মুসলিম মিল্লাতের মুখে এবং ইতিহাস গ্রন্থে এবং বৎসরকে “আমুল-জামা’আহ বা ঐক্যের বৎসর” বলা হয়েছে।


   _*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

44. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*       *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*  *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১৫====🥀*      *আহলে বাইতের সদস্য ব...