*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*
*====== প্রথম অধ্যায়,পর্ব -১০ ======*
*ইবনে সাবার ষড়যন্ত্রের প্রথম পর্ব*
আল্লাহ্ তা‘য়ালা ইরশাদ করেনঃ
*لَتَجِدَنَّ اَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَۃً لِّلَّذِیْنَ اٰمَنُوا الْیَهُوْدَ وَالَّذِیْنَ اَشْرَكُوْا ۚ وَلَتَجِدَنَّ اَقْرَبَهُمْ مَّوَدَّۃً لِّلَّذِیْنَ اٰمَنُوا الَّذِیْنَ قَالُوْۤا اِنَّا نَصٰرٰی ؕ ذٰلِکَ بِاَنَّ مِنْهُمْ قِسِّیْسِیْنَ وَرُهْبَانًا وَّاَنَّهُمْ لَا یَسْتَكْبِرُوْنَ*
(হে নবী) আপনি মুসলমানদের জন্য সব মানুষের চেয়ে অধিক শত্রু ইয়াহুদী ও মুশরিক (পৌত্তলিক) দের পাবেন এবং আপনি সবার চাইতে মুসলমানদের সাথে বন্ধুত্বের নিকটবর্তী তাদেরকে পাবেন যারা নিজেদেরকে খৃষ্টান বলে, এর কারণ তাদের মধ্যে আলেম রয়েছে দরবেশ রয়েছে এবং তারা অহংকার করে না। (সূরাহ মায়িদাহঃ ৮২)
পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, খিলাফত ধ্বংসের লক্ষ্যে হযরত উসমানের রাযি. খিলাফত কালে আব্দুল্লাহ বিন সাবা নামক এক ইয়াহুদী মুনাফিক মুসলিম বেশে মুসলমানদের মাঝে অনুপ্রবেশ করে। সে ছিল অত্যন্ত চতুর ও ধূর্ত। সে ইয়ামান হতে মদীনাতে এসে মুসলমানদের সাথে মিশে যায়। এখানে কিছুদিন অবস্থান করে সে মুসলমানদের আভ্যন্তরীণ সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে অবগতি লাভ করে। অতঃপর মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক বিভেদ সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি গোপন দল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করে। এ দলের প্রচারের ভিত্তি রাখা হয় এমন কতগুলো ধারার উপর যদ্দারা বাহ্যতঃ রাসূলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রতি অধিক প্রেম-মহব্বত ও আহলে বাইত তথা রাসুলের সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বংশধরের প্রতি অত্যাধিক অনুরাগ প্রদর্শিত হয়। যেমনঃ
*১.* আশ্চর্য, মুসলমানরা হযরত ঈসার আ. পুনরায় পৃথিবীতে আগমনের কথা বলে। কিন্তু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুনরাগমনের কথা মানে না।
*২.* সকল পয়গাম্বরের একজন ওয়াসী বা ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বশীল থাকেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি হচ্ছেন হযরত আলী রাযি. যেহেতু মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ নবী অতএব, আলী রাযি. শেষ ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
*৩.* বড় অন্যায়ের কথা মুসলমানরা নিজেদের নবীর ওসীয়তের কোন পরওয়া করলো না এবং তার ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি থাকা সত্ত্বেও খিলাফত অন্যদের [আবু বকর উমর ও উসমানের রাযি.] হাতে অর্পণ করে দিল। অতএব তাদেরকে অপসারণ করে ন্যায্য ব্যক্তিকেই [হযরত আলী রাযি.] এ অধিকার প্রদান করা জরুরী।
এ গোপন দলের শাখা প্রতিষ্ঠার জন্য ইবনে সাবা ইসলামী রাষ্ট্রের প্রদেশসমূহের কেন্দ্রীয় শহরগুলোতে দ্রুত সফর করে। উদ্দেশ্যে হাসিলের জন্য সব চেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তিদের বেছে নিয়ে তাদেরকে কাজের কৌশল জানিয়ে দিল এবং নিজে মিসরে এসে অবস্থান গ্রহণ করে মিসরকেই সে তার কেন্দ্র রূপে সাব্যস্ত করলো।
*কাজের জন্য যে কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হলো তা ছিল নিম্নরূপ:*
*ক)* দৃশ্যতঃ মুত্তাকী ও পরহেযগার হয়ে সাধারণ লোকদের উপর নিজের প্রভাব ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
*খ)* সমকালীন খলিফার (হযরত উসমান রাযি. বিরুদ্ধে অপবাদ রটাতে হবে এবং অভিযোগ আরোপ করতে হবে।
*গ)* বিভিন্ন প্রদেশের গভর্নরগণকে অস্থির করে তুলতে হবে। তাদেরকে অযোগ্য, অসাধু, দুর্নীতি পরায়ণ ও জালিম সাব্যস্ত করে প্রদশেসমূহের কলহ ছড়াতে হবে। সাজানো মিথ্যা দোষসমূহ রটিয়ে পত্রাদি প্রেরণ করতে হবে।
*ঘ)* এক শহর থেকে অন্য শহরে গভর্নরগণের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ পরিকল্পিত রূপে সাজানো মিথ্যা দোষ সমূহ রটিয়ে পত্রাদি প্রেরণ করতে হবে। মদীনা মুনাওয়ারা থেকে হযরত আলী, হযরত ত্বালহা, হযরত যুবাইর রাযি. প্রমুখ নেতৃস্থানীয় সাহাবায়ে কিরামের পক্ষ খেকে গভর্নরদের বিরুদ্ধে জাল চিঠি দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠাতে হবে, এ সকল পত্রে আবদুল্লাহ বিন সাবার এ তৎপরতার সাথে উল্লেখিত সাহাবাগণের সংশ্লিষ্টতার কথা প্রকাশ করতে হবে।
_*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন