অনুসরণকারী

বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০

41. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*


      *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত*             

                          *ইতিহাস* 


*🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১২====🥀* 


       *হযরত হুসাইনের রাযি. শাহাদাত* 


      প্রথমে হাতাহাতি লড়াই শুরু হল। উভয় পক্ষ থেকে এক জন করে ময়দানে আসত আর প্রতিপক্ষের সাথে লড়াই করত। কিন্তু এভাবে কুফাবাসীদের প্রচুর ক্ষতি হল। আব্দুল্লাহ ইবনে উমায়ের কালবী, বারীর ইবনে হাসীর, হুর ইবনে ইয়াযীদ এবং নাফে ইবনে হেলাল নিজেদের প্রতিপক্ষকে কচু কাটা করতে লাগল। এই দৃশ্য দেখে শত্রুবাহিনী থেকে উমর ইবনে হাজ্জাজ চিৎকার করে বলল, হে বাহাদুরবৃন্দ তোমরা কি জান কাদের সাথে লড়াই করছ? এরা তো তারা যারা স্বীয় প্রাণ হাতে নিয়ে বের হয়েছে। তাদের সাথে মল্লযুদ্ধ মোটেই সমীচীন নয় সম্মিলিতভাবে আক্রমণ কর। এরা কজনই বা সংখ্যায়? খোদার কসম তোমরা এদের উপর পাথর নিক্ষেপ করলেও এদের কেউ বাঁচবে না।


      এবার ব্যাপকভাবে লড়াই শুরু হল। স্বল্প সংখ্যক আহলে বাইতের জীবন উৎসর্গকারীরা অগণিত কুফাবাসীদের যম হিসাবে আবির্ভূত হল। হুসাইনী বাহিনীর বীরেরা যেদিকে ফিরত শত্রু বাহিনীর ব্যূহ ছিন্ন ভিন্ন করে ফেলত। কিন্তু যুদ্ধ ছিল অসম (একদিকে অগণিত সেনা। অপরদিকে মাত্র ৭২ জন)। দুপুর হতে হতে হযরত হুসাইন রাযি. এর সকল সাথি এক একে শহীদ হয়ে গেলেন।


      এবার রয়ে গেলেন আহলে বাইতের যুবকবৃন্দ। আকবার ইবনে হুসাইন, আব্দুল্লাহ ইবনে আকীল, মুহাম্মদ ইবনে আকীল, কাসেম ইবনে হুসাইন ইবনে আলী, আবু বকর ইবনে হুসাইন ইবনে আলী প্রমূখগন স্বীয় স্বীয় তরবারীর ঝলক দেখাতে দেখাতে জান্নাতী যুবকদের সরদারের জন্য জান কুরবান করে দিলেন। পরিশেষে হযরত ইমাম হুসাইন রাযি. এর সাথে তার চার ভাই আব্বাস, আব্দুল্লাহ, জাফর এবং উসমান ছাড়া আর কেউ অবশিষ্ট রইল না। যতক্ষণ পর্যন্ত বুকে দম থাকল তারা প্রতিটি আঘাত বুক পেতে গ্রহণ করতে লাগলেন। অবশেষে এক এক করে তারাও জান্নাতের পথে পাড়ি জমালেন । ইমাম হুসাইন রাযি. এখন নিঃসঙ্গ একা। আঘাতে আঘাতে জর্জরিত। পিপাসায় কাতর। কিন্তু তার বীরত্ব উৎসাহ আর উদ্দীপনায় কোন ভাটা পড়ল না। যেদিকেই তার তরবারী উঠত শত্রুর অগণিত লাশ মাটিতে লুটিয়ে পড়ত। অবশেষে ক্লান্ত শ্রান্ত হয়ে মাটিতে বসে পড়লেন। দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত এভাবে নিশ্চুপ বসে থাকলেন কিন্তু দুশমন তার উপর হামলা করতে সাহস পেল না। তার রক্তে নিজের ভাগ্যকে কলঙ্কিত করা থেকে সকলে বাঁচতে চাচ্ছিল। পরিশেষে শিমার চিৎকার করে বলল এখন কিসের অপেক্ষা? তাকে হত্যা করছ না কেন?


      হযরত হুসাইন রাযি. তৃষ্ণার্ত ওষ্ঠে কেবল মাত্র পানির পাত্র লাগিয়ে ছিলেন এমন সময় হুসাইন ইবনে তামীম নিশানা করে একটি তীর নিক্ষেপ করল যা তার কণ্ঠনালীতে এসে বিদ্ধ হল। তিনি টলতে টলতে ফুরাতের দিকে চললেন কিন্তু শত্রুবাহিনী চারিদিক থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ল। অরা বিন শুরাইক তামিমী তার উপর তরবারীর আঘাত করল সিনান ইবনে আনাস নাখঈ বর্শার আঘাতে তাকে যমিনে শায়িত করে ফেলল এবং তরবারী দিয়ে মস্তক মুবারক দ্বিখণ্ডিত করে দিল। (ইন্না-- -- --রাজেউন) (আখবারুত তিওয়াল ২৫৫, আল কামেল ৩/৪৩০)


      তার পবিত্র শরীরে বর্শার ৩৩টি আঘাত আর তরবারীর ৩৩টি আঘাত ছিল। এছাড়া অগণিত তীরের আঘাত তো ছিলই। (আল কামেল ৩/৪৩২)


      তার শাহাদাতের পরে পাপিষ্ঠরা আহলে বাইতের মহিলাদের তাঁবুর দিকে ধাবিত হল। মাল-সামান যা কিছু ছিল সব লুট পাট করে নিলো। এমন কি মহিলাদের গায়ের চাদর পর্যন্ত খুলে নিলো। তার দুই পুত্র যাইনুল আবেদীন এবং আলী আসগর অসুস্থতার কারণে তাবুতে শায়িত ছিল। শিমার তাদেরকেও শহীদ করতে চাইল, কিন্তু উমর ইবনে সাআদ বলল, মহিলাদের তাবুতে প্রবেশ করনা। আর বাচ্চাদের গায়ে হাত উঠিওনা।


      মহিমান্বিত শাহাদাতের এই মর্মান্তিক হৃদয়স্পর্শি ঘটনা ৬১ হিজরী সনের ১০ ই মুহাররম রোজ শুক্রবার সংঘটিত হল। পরের দিন গাযেরিয়ার অধিবাসীরা জানাযার নামায আদায় করে শহীদদেরকে কারবালার ময়দানেই দাফন করল। হযরত হুসাইন রাযি. সহ অন্যান্য শহীদদের মাথা যেহেতু দুশমনরা কেটে নিয়ে গিয়েছিল তাই মাথা বিহীন শরীর দাফন করা হল। আল্লাহ তা’আলা তাদের সকলের উপর রহম করুন এবং তাদের সকলকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসীব করেন।


           *آمیـــــــــن‎ ‎یــا ربّـــــ العــالمیــــن*



   _*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

44. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*       *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*  *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১৫====🥀*      *আহলে বাইতের সদস্য ব...