অনুসরণকারী

মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর, ২০২০

30. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *﷽   ﷽    ﷽    ﷽    ﷽*    *﷽*


*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস* 


 *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১ ====🥀*


  *কারবালার সঠিক ইতিহাস শুরুর কথা* 


      হায়াতের শেষের দিকে বেশ কিছু দিন মদীনায় অবস্থান করার পর হযরত মু‘আবিয়া রাযি. ও হজ্বের উদ্দেশ্যে মক্কায় এসে হাজির হলেন এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর, হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাযি. কে ইয়াযীদকে খলীফা ঘোষণার ব্যাপারে পৃথক পৃথক ভাবে বুঝাতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু কোনক্রমেই তাদেরকে রাজী করানো যাচ্ছিল না। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. বললেন -আপনার পূর্বে যারা খলীফা ছিলেন তাঁদেরও অনেক যোগ্য সন্তানাদি ছিল। যোগ্যতার মাপকাঠিতে তারা ইয়াযীদের চেয়ে অনেক উর্ধ্বে ছিল, তবুও তাঁরা তাঁদের সন্তানদের এ দায়িত্ব অর্পণ করেননি। তাঁরা মুসলমানদের সার্বিক কল্যাণের প্রতি লক্ষ্য রেখে খেলাফতের দায়িত্ব অন্যের হাতে অর্পণ করে গেছেন। অথচ আপনি আপনার সন্তানের জন্য এ কাজটি করে যাচ্ছেন।


      এমনিভাবে প্রত্যেকের সাথে হযরত মু‘আবিয়ার রাযি. মতবিনিময় হয় এবং সকলেই ইয়াযীদের হাতে বাই’আত গ্রহণ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন।


      সর্বোপরি হযরত হুসাইন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের রাযি. সহ আরও কতিপয় শীর্ষস্থানীয় সাহাবায়ে কিরাম হযরত মু‘আবিয়া রাযি. সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে পরামর্শ দেন আপনি আমাদেরকে ইয়াযীদের হাতে বাই’আতের জন্য শক্তি প্রয়োগ করবেন না। আমরা আপনার নিকট তিনটি প্রস্তাব পেশ করছি তার যে কোন একটি আপনি গ্রহণ করতে পারেন। আমাদের সাথে আপনার অন্য কোন বিরোধ নেই। প্রস্তাব তিনটি হলঃ


   *একঃ* খলীফা নির্বাচনের ব্যাপারে আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নীতি অনুসরণ করুন। অর্থাৎ আপনি কাউকে মনোনীত না করে মুসলমানদের উপর এ দায়িত্বভার ছেড়ে দিন। তারা যাকে ভাল মনে করেন তিনিই মনোনীত হবেন সকলের আমীরুল মুমিনীন।


   *দুইঃ* আপনি আমীরুল মুমিনীন হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু’র পন্থা অবলম্বন করুন। অর্থাৎ আপনি এমন এক ব্যক্তির নাম পেশ করুন যার সাথে আপনার বংশের কোন সম্পর্ক থাকবে না, থাকবে না আপনার আত্মীয়তার কোন বন্ধন এবং দায়িত্ব পালনের যোগ্যতাও তার মাঝে পাওয়া যাবে।


   *তিনঃ* আপনি ফারুকে আযম হযরত উমর রাযিয়াল্লাহু আনহু’র পদ্ধতি অবলম্বন করুন। অর্থাৎ আপনি ছয় জন বিশ্বস্ত ব্যক্তিত্বের উপর এ দায়িত্ব অর্পণ করে যান তারাই নির্ধারণ করবেন পরবর্তী খলীফা কে হবেন। এ ছাড়া চতুর্থ আর কোন প্রস্তাব আমরা মানতে রাজী নই।


      কিন্তু হযরত মু‘আবিয়া রাযি. তদুত্তরে বললেন- সারা মুসলিম বিশ্ব ইয়াযীদের হাতে বাই’আত গ্রহণ করেছে। এখন আপনাদের এ কয়জনের বিরোধিতার পরিণাম মুসলমানদের জন্য আদৌ কল্যাণকর হবে না। এ পরিস্থিতিতে সকলেরই উচিত ইয়াযীদের হাতে বাই’আত গ্রহণ করা।


      হযরত মু‘আবিয়ার রাযি. খেলাফত কালে পরিস্থিতি আর ঘোলাটে হওয়ার সুযোগ পায়নি। মুসলমানদের পরস্পর মতভেদ এড়ানোর জন্য সিরিয়া ও ইরাকবাসীদের বৃহৎ অংশের পর মুসলিম জনতার আরও একটি বৃহদাংশ ইয়াযীদের হাতে বাই’আত গ্রহণ করে। কিন্তু মদীনার অধিবাসীগণ বিশেষতঃ হযরত হুসাইন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. ইয়াযীদের হাতে বাই’আত গ্রহণ না করার উপর দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রইলেন। তাঁরা কারও ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত না হয়ে প্রকাশ্যে ঘোষণা করলেন- ইয়াযীদ কোন অবস্থাতেই খলীফাতুল মুসলিমীন হওয়ার যোগ্য নয়।


      এ অবস্থায় হযরত মু‘আবিয়া রাযি. এর ইন্তিকালের পরে ৬০ হিজরীতে ইয়াযীদ সিংহাসনে আরোহণ করেন। হযরত মুআবিয়া রাযি. স্বীয় জীবদ্দশায় বিভিন্ন এলাকার মুসলমানদের থেকে তার উত্তরাধিকারী হওয়ার বাই’আত গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু কুরাইশের খ্যাতনামা লোকজন এবং হেজাযের নেতৃবৃন্দ যেমন- হযরত ইমাম হুসাইন রাযি., আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর এবং আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকর রাযি. বাই’আত করলেন না, এর বিস্তারিত আলোচনা ইসলামী ইতিহাসে বর্ণিত হয়েছে।


      একথা স্পষ্ট যে, এসব হযরত নিজেদের ব্যক্তিগত গুণাবলী আর বংশীয় মর্যাদার কারণে সমস্ত উম্মতে উপরে প্রভাব প্রতিপত্তির অধিকারী ছিলেন। তাদের এই মতবিরোধ কোন সাধারণ ব্যাপার ছিল না। তাই সিংহাসনে আরোহণের সাথে সাথেই ইয়াযীদ এদের ব্যাপারে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়লেন।


      ওলীদ ইবনে উতবা ইবনে আবু সুফিয়ান তখন মদীনার শাসক ছিলেন। ইয়াযীদ তার নিকট হযরত মু‘আবিয়ার রাযি. মৃত্যুর সংবাদ পাঠালেন আর এসব হযরতের নিকট থেকে বাই’আত গ্রহণের তাকিদ করলেন। ওলীদ ইবনে উতবা এ বিষয়ে সফলতার জন্য মারওয়ান ইবনে হাকামের সাথে পরামর্শ করলেন যিনি তখন মদীনাতেই থাকতেন। মারওয়ান বলল আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. আর আব্দুর রহমান ইবনে আবু বকরের রাযি. ব্যাপারে চিন্তার কোন কারণ নেই কেননা তারা ক্ষমতার দাবীদার নয়। তবে হুসাইন ইবনে আলী রাযি. আর আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইরকে রাযি. এক্ষুনি ডেকে ইয়াযিদ এর পক্ষে বাই’আত করতে বাধ্য কর। যদি তারা না শোনে তাহলে জীবিত বাইরে যেতে দিওনা। যদি আমীরের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে আর তারা বাই’আত না করে তাহলে এরা নিজ নিজ সমর্থকদের নিয়ে ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং বিরোধিতার সুর উঁচু হয়ে যাবে।


   _*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

44. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*       *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*  *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১৫====🥀*      *আহলে বাইতের সদস্য ব...