অনুসরণকারী

সোমবার, ৫ অক্টোবর, ২০২০

28. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *﷽   ﷽    ﷽    ﷽    ﷽*    *﷽*


*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস* 


*🥀====দ্বিতীয় অধ্যায়,পর্ব -৫ ====🥀*


              *শিয়া-রাফেজীর স্বরূপ* 


      যে সমস্ত শিয়ারা হযরত আলীর রাযি. ভক্তির আতিশয্যে এরূপ জঘন্য আক্বীদা পোষণ করে যে-


   *(ক)* হযরত আলীই প্রকৃতপক্ষে সর্বশেষ নবী হওয়ার যোগ্য ও আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি ছিলেন, কিন্তু আল্লাহ পাক যখন ফেরেশতা হযরত জিবরাইল আ. মারফত হযরত আলীর রাযি. নিকট ওহী পাঠালেন তখন জিবরাঈল আ. ভুলবশতঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ওহী নিয়ে আসেন। ফলে তিনিই শেষ নবী হয়ে যান। অতঃপর মহানবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিরোধানের পর হযরত আলীই রাযি. খিলাফতের হকদার ছিলেন। কিন্তু আবু বকর, উমর ও উসমান রাযি. তাঁর খিলাফত ছিনিয়ে নেন। এ জন্য তারা এবং অপরাপর সাহাবী রাযি. যারা তাদের সমর্থন করে সবাই মুরতাদ ও কাফির হয়ে গেছেন। (নাউযুবিল্লাহ)।


   *(খ)* এমনকি তাদের মধ্য হতে একদল হযরত আলীর রাযি. জীবদ্দশায় তাকে খোদা পর্যন্ত ডাকতে আরম্ভ করেছিলেন। স্বয়ং হযরত আলী রাযি. তাদের বুঝিয়ে ব্যর্থ হয়ে এহেন কুফরী কাজের জন্য হত্যার হুমকি দিলে তারা বলতে থাকে আপনি আমাদের মা’বুদ। আপনার যা খুশী তা করার অধিকার আছে। আমাদের তাতে আপত্তি করার অধিকার নেই। অতঃপর হযরত আলী রাযি. তাদের একাংশকে হত্যা করলেও তাদের অপরাংশকে এ ভ্রষ্টতা হতে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হন।


   *(গ)* শিয়া-রাফিজীদের আরেক দল বিশ্বাস করত এবং একথা তারা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে মুসলিম জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করত যে, কুরআন বিকৃত হয়ে গেছে। আসল কুরআন হযরত আলীর রাযি. কাছে সংরক্ষিত আছে। তাছাড়া হযরত আলী রাযি. কে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতিরিক্ত নব্বই হাজার কালাম দিয়ে গেছেন ইত্যাদি। স্বয়ং হযরত আলী রাযি. কে তাঁর জীবদ্দশায় একাধিক স্থানে বিভিন্ন তাবেয়ী রহ. এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে এসব কথা নাকচ করে দিয়েছেন। যার অসংখ্য দৃষ্টান্ত হাদীসগ্রন্থ সমূহে বিদ্যমান রয়েছে।


   *(ঘ)* বার ইমামপন্থী শিয়া ইছনা আশারিয়া রা হযরত আলী রাযি. হযরত হাসান ও হুসাইন রাযি. সহ তাঁর বংশধরের মধ্যে বারজন বুযুর্গ ব্যক্তিবর্গকে ইমাম হিসেবে নবী সম বরং কোন কোন ক্ষেত্রে নবীদের ঊর্ধ্বে মর্যাদা দিয়ে তাদের নামের সংগে “আলাইহিস সালাম” বলেও লিখে থাকে। যা সাধারণতঃ নবী ও ফেরেশতাগণের নামের সাথেই ব্যবহার করার কথা। এমনকি ইসলামী হুকুমতের দাবীদার শিয়া ইছনা আশারিয়া পন্থী বর্তমান ইরান সরকারের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ খোমেনী তার আরবী ভাষায় রচিত আল-হুকুমাতুল ইসলামিয়াহ, গ্রন্থে দ্ব্যর্থহীন ও স্পষ্টভাবে লিখেছেনঃ “ইমাম এর মর্যাদা নবুওয়াতের উপরে। আর আমাদের ইমামগণ এমন মর্যাদার অধিকারী যেথায় আল্লাহ্‌র কোন নবী রাসূল এবং নিকটতম ফেরেশতাও পৌছতে পারেন না। যে কারণে তাঁদের রয়েছে শরী‘আতের যে কোন বিধি বিধান যে কোন মুহূর্তে পরিবর্তনের সীমাহীন অধিকার। (নাউযুবিল্লাহ)


      কত বড় জঘন্য ও দুঃখজনক কথা যে, এহেন জঘন্য আক্বায়িদে বিশ্বাসী শিয়া রাফিজীদের অকাট্য মিথ্যাচারকে পুঁজি করেই কেবল খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত মুআবিয়ার রাযি. ন্যায় রাসূলুল্লাহর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘনিষ্ঠ অতি প্রিয় ও বিশিষ্ট সাহাবী রাযি. এবং আল্লাহর প্রেরিত কালামে পাকের ওহী লেখকরূপে স্বীয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নিয়োজিত ব্যক্তির ব্যক্তিত্বের উপর অত্যন্ত জঘন্যভাবে হামলা করা হয়েছে। বস্তুতঃ এ অপপ্রচার পৃথিবীর একমাত্র অপরিবর্তিত অবিকৃত ও স্বীয় আল্লাহ পাক কর্তৃক হিফাজতকৃত আল-কুরআনের প্রতি মুসলিম উম্মাহর ইস্পাত কঠিন অবিচল আস্থা ও বিশ্বাসকে দুর্বল করার লক্ষ্যে ইয়াহুদী খৃষ্টানদের প্ররোচনায় উদ্ভাবিত ষড়যন্ত্র বৈ কিছু নয়।


      হযরত মুআবিয়া রাযি. তো সেই ভাগ্যবান সাহাবী রাযি. যিনি মহানবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপন শ্যালক ও কাতিবে ওহী বা ওহী লিপিবদ্ধকারী হওয়ার সাথে সাথে মহানবীর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একাধিক মাকবুল দু‘আয় ধন্য হয়েছেন। যেমন তিরমিযী শরীফে বর্ণিত হয়েছে একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে এভাবে দু’আ দিয়েছেনঃ


      “হে আল্লাহ্‌ তাকে (মুআবিয়াকে) হিদায়াতের পথ প্রদর্শক ও হিদায়াত প্রাপ্ত করে দাও এবং তাঁর মাধ্যমে মানুষকে হিদায়াত দান কর।”


      অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছেঃ ‘‘হে আল্লাহ! মুআবিয়াকে কিতাবী ইলম ও গণনা জ্ঞান দান কর এবং জাহান্নামের আযাব থেকে তাকে রক্ষা কর।”


      তাঁর সম্পর্কে একদা ফেরেশতা হযরত জিবরাইল আ. হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেছিলেন হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুআবিয়াকে সালাম জানাবেন তাঁর মঙ্গলের প্রতি বিশেষ নজর রাখবেন। কেননা তিনি আল্লাহর কিতাব ও ওহীর উপর স্বীয় আল্লাহরই নিযুক্ত আমানতদার এবং তিনি অতি উত্তম আমানতদার।


      এমনিভাবে বড় বড় সাহাবায়ে কিরাম ও তাবিয়ীগনের রাযি. দৃষ্টিতে হযরত মুআবিয়া রাযি. যে কত উঁচু মর্যাদার অধিকারী ছিলেন এবং তাঁর মহান মর্যাদার স্বীকৃতি স্বরূপ তাঁর প্রতি তাদের আচরণ ও প্রশংসামূলক বাণীসমূহ হাদীস ও ইতিহাস গ্রন্থসমূহে এত অধিক হারে লিপিবদ্ধ রয়েছে যে, বক্ষ্যমাণ নিবন্ধে তার ক্ষুদ্র একটি অংশের স্থান সংকুলান হওয়াও অসম্ভব। হযরত উমর ফারুক রাযি. এর ন্যায় বিচক্ষণ খলীফা হযরত মুআবিয়া রাযি. কে দীর্ঘদিন শাসন কার্যে নিয়োজিত রেখেছিলেন এবং তার শাসনকার্য পরিচালনার ব্যাপারে আমানতদারী ও দক্ষতার ভিত্তিতে বার বার পদোন্নতি দান করেছিলেন। এটা এ বিষয়ের একটা মজবুত প্রমাণ যে, সাবায়ীচক্র কর্তৃক হযরত মুআবিয়ার রাযি. বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগসমূহ একেবারেই অবাস্তব, মিথ্যা ও গর্হিত।


      হযরত মুআবিয়ার রাযি. এ সকল কামালাত ও ফজীলতের কথা স্মরণ রেখেই তৎকালীন মুসলমানগণ সাবায়ীদের এ সকল অপপ্রচারে কান দেননি। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, আজ চৌদ্দশত বছর পর আবারো সেই কুখ্যাত ইবনে সাবা ও সাবায়ীদের উত্তরসূরীরা এহেন বুযুর্গ সাহাবী রাযি. সম্পর্কে সাধারণ মুসলমানদেরকে তাদের ধর্মীয় জ্ঞানের স্বল্পতা ও সঠিক ইসলামী ইতিহাস অধ্যয়নের অভাবের সুযোগ নিয়ে বিভ্রান্ত করার প্রয়াস পাচ্ছে। এ শ্রেণীর লোকদের থেকে মুসলমানদের সতর্ক থাকতে হবে।


   _*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

44. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*       *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*  *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১৫====🥀*      *আহলে বাইতের সদস্য ব...