*ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*
*====== প্রথম অধ্যায়,পর্ব -১৫ ======*
*সাবায়ীদের বিরুদ্ধে হযরত আলী রাযি. এর দ্ব্যর্থহীন ভাষণ ও এর প্রতিক্রিয়াঃ*
হযরত আলী রাযি. শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত করার লক্ষ্য বসরা গমনের প্রস্তুতি নিলেন। রওয়ানা হওয়ার পূর্বে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে তিনি একটি ভাষণ দিলেন। ভাষণে তিনি জাহিলিয়াতের অন্ধকার ও ইসলামের আলোর কথা উল্লেখ করেন। অতঃপর মুসলমনাদেরকে পারস্পরিক ঐক্য, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের যে মহান নিয়ামত দান করা হয়েছিল, তা উল্লেখপূর্বক বর্তমান অনৈক্য ও বিশৃঙ্খলার উপর দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এর জন্য ইসলাম বিদ্বেষীদের ষড়যন্ত্রকেই দায়ী করে বলেন- “যারা মুসলমানদের উন্নতি ও প্রতিপত্তি সহ্য করতে পারে না এবং মুসলমানদের বিশ্বব্যাপী রাজত্ব বিস্তারে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাদের অধঃপতন কামনা করে বর্তমানের এ সৃষ্ট পরিস্থিতি তাদেরই ষড়যন্ত্রের পরিণতি।”
অতঃপর তিনি বললেন- আগামীকাল আমরা বসরায় যাব। কিন্তু আমাদের এই সফর যুদ্ধের উদ্দেশ্যে নয় বরং শান্তি ও একতার জন্য। অতএব যারা হযরত উসমানের রাযি. হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিল তাদের কেউ যেন আমাদের সঙ্গে না যায়।
হযরত আলীর রাযি. স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন এ ভাষণ শ্রবণ করতঃ সাবায়ীদের পয়ের নীচ হতে মাটি সরে গেল। তাই যে কোন মূল্যে এই ঐক্য প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করার লক্ষ্যে মরণ কামড় হানার পায়তারায় আব্দুল্লাহ বিন সাবা তার ঘনিষ্ঠ সাঙ্গ পাঙ্গদের নিয়ে এক গোপন বৈঠকে বসল। বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতঃ তারা মতামত ব্যক্ত করল যে যদি আলী রাযি. ও ত্বালহা-যুবাইরের রাযি. মাঝে ঐক্য সম্পাদিত হয়ে যায় তাহলে তা আমাদের রক্তের উপর দিয়ে সম্পাদিত হবে যা আমাদের এতদিনের সকল প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দিবে। অতএব যে কোন মূল্যে এ সন্ধি প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে হবে।
পরের দিন সকালে হযরত আলী রাযি. স্বীয় বাহিনীসহ বসরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলেন। অপরপক্ষে হযরত ত্বালহা-যুবাইর রাযি. ও তাদের বাহিনী নিয়ে বসর হতে বেরিয়ে ‘আসলেন। উভয় দর তিন দিন পর্যন্ত মুখোমুখি অবস্থান করল। উভয়পক্ষের মাঝে আলোচনা চলতে থাকল। অবশেষে হযরত আলী রাযি. হযরত ত্বালহা ও যুবাইর রাযি. নিকট প্রস্তাব পাঠালেন যে, ক্বা‘ক্বা‘র সঙ্গে এর পূর্বে যে কথা হয়েছিল তাতে যদি আপনারা একমত থাকেন তাহলে আর সময় ক্ষেপণ না করে চূড়ান্ত ফয়সালা হয়ে যাওয়া উচিৎ। তাঁরা উত্তর দিলেন আমরা নিঃসন্দেহে সে কথার উপর অটল আছি। অতঃপর এ পক্ষ থেকে এই দু’জন ও অপরপক্ষ হতে হযরত আলী রাযি. নিজ ঘোড়ায় আরোহণ করে বের হলেন এবং অপরের সঙ্গে লেগে গেল। অতঃপর দীর্ঘক্ষণ ধরে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এই তিন নেতার সরাসরি বৈঠক ও আন্তরিক আলোচনা হল। আলোচনায় উভয়পক্ষেই অতীতের বিভিন্ন স্মৃতি চারণ করলেন। এ বৈঠকের পর সন্ধিচুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ব্যাপারে আর কোন সন্দেহ ও আশংকা রইল না।
_*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন