অনুসরণকারী

শনিবার, ৩ অক্টোবর, ২০২০

12. *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস* 


 *====== প্রথম অধ্যায়,পর্ব -১২ ======*


 *হযরত উসমান রাযি. এর বিরুদ্ধে কয়েকটি ভিত্তিহীন অভিযোগঃ* 


      হযরত উসমান রাযি. এর বিরুদ্ধে ইবনে সাবা কর্তৃক আরোপিত স্বজন-প্রীতি তথা স্বীয় বংশীয় লোকদেরকে রাষ্ট্রীয় তহবিল হতে অধিক সম্পদ প্রদান ও সরকারী চাকুরীতে অধিক হারে তাদের নিয়োগ দানের অপবাদ দেয়া হয়েছিল। যার উপর ভিত্তি করে আজ ইসলামী খিলাফতের বিকৃত ইতিহাস রচিত হয়েছে। এগুলো যে কেবলমাত্র ইবনে সাবার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তার সাজানো, মনগড়া ও মিথ্যা অভিযোগ ছিল, সে বিষয়টি পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু সেই সাবায়ী দলের গর্হিত ইতিহাসের ভিত্তিতেই বর্তমানে জনসাধারণের মাঝে প্রচলিত ইসলামী খিলাফতের বিকৃত ইতিহাস রচিত তাই নতুন করে তার অসারতা প্রমাণ করা প্রয়োজন।


      স্বীয় বংশীয় লোকদের অধিক সম্পদ দান সংক্রান্ত অভিযোগের উত্তর স্বয়ং হযরত উসমান রাযি.-এর মুখেই শুনুন এবং বাস্তবতার প্রতিও লক্ষ্য রাখুন।


      একবার ইবনে সাবা কুফা হতে তার কিছু অনুচরকে নেককার মানুষের বেশে মদীনা প্রেরণ করলো যেন তারা জনসমক্ষে হযরত উসমান রাযি. কে এতদসংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে ও তাকে হেস্তনেস্ত করে এবং চূড়ান্তরূপে অভিযুক্ত করতে সক্ষম হয়।


      হযরত উসমান রাযি. গোপনে তাদের উদ্দেশ্য ও মদীনা আগমনের সংবাদ পেয়ে তাদেরকে মসজিদে ডাকালেন। ইতিমধ্যেই আজান দেয়া হল। তারা খলীফা হযরত উসমানের একেবারে সম্মুখে মিম্বরের নিকটবর্তী স্থানে বসলে উপস্থিত সাহাবীগণ রাযি. খলীফাকে ঘিরে বসলেন। খলীফা উসমান রাযি. উপস্থিত জনতাকে ইবনে সাবার অনুচরদের উদ্দেশ্যে ও পরিকল্পনা অবগত করিয়ে বিস্তারিত ভাষণ দেন। জনগণ তখন সেই কুচক্রীদের মৃত্যুদণ্ড দাবী করে। হযরত উসমান রাযি. উত্তরে বলেন আমি তাদের ক্ষমা করে দিব এবং আমার সৎ প্রচেষ্টায় তাদের বুঝাতে চেষ্টা করবো। আমি কাউকে প্রাণদণ্ড দিব না যাবৎ না সে প্রাণদণ্ডের অপরাধ করে অথবা প্রকাশ্যে কুকুরী করে। অতঃপর তিনি স্বজন-প্রীতির কথিত অভিযোগের উত্তরে বলেনঃ তারা অভিযোগ করে থাকে আমি আমার আপন জনদের অধিক ভালবাসি এবং তাদের অধিক দিয়ে থাকি। এ সম্পর্কে আমার বক্তব্য এই যে আপনজনের সঙ্গে স্বাভাবিক ভালবাসা আছে বটে কিন্তু কোন অন্যায় ব্যাপারে তাদের পক্ষ সমর্থন করি না। বরং তাদের প্রাপ্য হক আমি তাদের নিকট পৌঁছে দেই মাত্র।


      আর তাদের যে অধিক দিয়ে থাকি, তা আমার ব্যক্তিগত ও নিজস্ব সম্পদ হতে দিয়ে থাকি। মুসলমানদের সম্পদ তথা সরকারী ধন ভাণ্ডারকে আমি আমার জন্য এবং আমার আত্মীয় বা নিজস্ব কোন ব্যক্তির জন্য হালাল মনে করি না।


      রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে এবং আবু বকর ও উমর রাযি. এর আমলেও আমি আমার ব্যক্তিগত সম্পদ হতে ভাল ভাল ও বড় বড় দান করতাম। অথচ ঐ সময় তো বয়স হিসেবে পার্থিব ধন-সম্পদের প্রতি অধিক লোভ লালসার সময় ছিল। আর যখন আপন পরিজনের মধ্যে আমার বয়স সর্বাধিক। আমার বয়স শেষ সীমায় পৌঁছিয়েছে (৮০ হতে ৯০) এমতাবস্থায় আমি আমার ব্যক্তিগত বা নিজস্ব যা কিছু ছিল আপনজনদের দিয়ে দিয়েছি তাতে বেঈমানরা নানা রকম কথা বলে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন আমি যখন খলীফা নির্বাচিত হয়েছিলাম তখন আমি আরবের সর্বাধিক ধনাঢ্য ব্যক্তি ছিলাম। আরবের সবচেয়ে বেশী উট-বকরী আমার ছিল। বর্তমান মুহূর্তে আমার হজ্জের জন্য রক্ষিত দুটি উট ছাড়া অতিরিক্ত একটি উট বা একটি বকরীও আমার নেই। আমার সব আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বণ্টন করে দিয়েছি। হযরত উসমান রাযি. স্বীয় এই উক্তির উপর মদীনাবাসী জনগণের সাক্ষ্য চাইলেন- এটাই কি প্রকৃত অবস্থা নয়? তারা সকলে একবাক্যে আল্লাহকে হাজির নাযির উল্লেখ করতঃ বললেন, হ্যাঁ এটা বাস্তব সত্য।


      হযরত উসমান রাযি. এর এই বক্তৃতার বর্ণনাকারী এ তথ্যও প্রকাশ করেছেন যে, হযরত উসমান রাযি. তার সমুদয় সম্পত্তি স্বীয় বংশের লোকদের মাঝে বণ্টন করে দিয়েছিলেন। আর এক্ষেত্রে তিনি আপন পুত্র-কন্যাকে দানকৃত লোকদের সমশ্রেণীর করে দিয়েছিলেন। বস্তুতঃ ইসলামের বিধান অনুযায়ী নিজস্ব মাল দেয়ার সময় স্বীয় বংশ ও আত্মীয় স্বজনই অগ্রগণ্য-এটাই সুন্নত তরীকা।


      তাছাড়া হযরত উসমান রাযি. ব্যক্তিগতভাবে ইসলামের পূর্ব হতেই আরবের অন্যতম ধনী ব্যক্তি হওয়ার পাশাপাশি তিনি অত্যন্ত দানশীল ছিলেন। ইসলাম গ্রহণের পর মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে তার সিংহভাগ সম্পদই মুসলমানদের কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় হয়। যে কোন ধরনের নেক কাজে সম্পদ ব্যয় করায় তিনি থাকতেন সর্বাগ্রে। এ জন্য তাকে বলা হতো উসমানে গনী বা ধনী উসমান।


   _*📋নিজে পড়বেন এবং শেয়ার করে অন্যদেরকেও জানার সুযোগ করে দিবেন।*_

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

44. ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*

 *⛲ ♧  ﷽   ﷽   ﷽   ﷽*  *♧*  *⛲*       *ইসলামী খেলাফত ধ্বংসের প্রকৃত ইতিহাস*  *🥀====তৃতীয় অধ্যায়,পর্ব -১৫====🥀*      *আহলে বাইতের সদস্য ব...